টিভি চালু করলাম, বাংলাদেশের
খবর চলছিল। ডঃ এম এম মোখলেস জাতীয় নামের
কে একজন কথা বলছেন, তার নিচে পরিচিতি লিখা “শকুন
বিশেষজ্ঞ”। আমার হাসির রেশ
না মিলাতেই প্রচারিত হলো আব্দুল মান্নান সৈয়দের মৃত্যুর সংবাদ। মানুষের অনুভূতিতে হাসি আর শোকের দূরত্ব খুবই কম।
আব্দুল মান্নান সৈয়দ একজন কবি,কথাশিল্পী,প্রাবন্ধিক ও গবেষক। এক সময় লিখেছেন একধারে সংবাদ ও সংগ্রামের মতো বিপরীত ধারার
পত্রিকায়। সাহিত্যের প্রশ্নে বিভাজনে বিশ্বাসী
ছিলেন না তিনি। তাই এই সময়েও একই সাথে তাঁর সাহিত্য
কর্মের মূল্যায়ন প্রকাশিত হয় প্রথম-আলো, জনকন্ঠ, আজাদী ও
সংগ্রামে। সচলায়তন আর সোনারবাংলা ব্লগে তিনি
একই সাথে প্রাসঙ্গিক। লেখক হিসেবে আব্দুল মান্নান সৈয়দ সার্বভৌম।
টিভিতে অ্যাম্বুলেন্সে শুইয়ে
রাখা মান্নানের মৃতদেহের ছবির পরপরই পর্দায় ভেসে এলো আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের মুখ।
খুবই স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বলে গেলেন তার অনুভূতির কথা। আমার মনে পড়লো এক সময় আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের কাছ থেকে জানা এক
বন্ধুত্বের গল্প।
৪৬ বছরের দীর্ঘ বন্ধুত্ব। সময়ের এতো সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে দুই বন্ধু নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন যে কেবল মৃত্যুই এই বন্ধুত্বের অবসান ঘটাতে পারে। মৃত্যু নিয়ে তাই দুই বন্ধু সায়ীদ আর মান্নানের মাঝে রসিকতা হতো- কে আগে যাবে? জার্মানীর গ্যেটে আর শিলারের বন্ধুত্বের উপমা দিয়ে মান্নান ঠাট্টা করতেন- কার আগে মৃত্যু আসে তার মাধ্যমেই ঠিক হবে এই দুই বন্ধুর মাঝে এদেশে কে ছিল গ্যেটে আর কে ছিল শিলার। আজ আমরা বাংলাদেশের শিলার কে হারালাম।
আব্দুল মান্নান সৈয়দ প্রয়াত
৬ সেপ্টেম্বর, ২০১০
নক্সভিল, টেনেসি
সচলায়তন ব্লগে প্রথম প্রকাশিত