২০ ফেব, ২০১৬

ক্লান্ত ‘বাংলাভাষা’

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এর সংগঠন ও বাঙ্গালী বই থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি:

আজও একুশে ফেব্রুয়ারির রাত তিনটায় পাড়ার সাহিত্য-প্রেমিকদের চড়াগলার ডাকাডাকি শুরু হয়ে যায়। শুনতে পাই উৎকণ্ঠিত কণ্ঠের উদ্বুদ্ধ আহ্বান: ভাইসব, আপনাদের ভেতর কি বাংলাভাষার প্রতি ভালোবাসা নাই? বাংলা সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা নাই? আপনারা এখনো ঘুমান? আপনারা উঠুন! শহীদ মিনারে ফুল দেবার মিছিলে যোগ দিন। তাদের কণ্ঠে একই সঙ্গে বেদনা ও ধমক। ডাকাডাকির ফলে চারপাশের ঘরবাড়ি থেকে সবাই এসে সমবেত হয়, শুরু হয় তিন-চার ঘণ্টার সুদীর্ঘ মিছিল; তারপর বহু মিছিলের পেছনে হেঁটে, দীর্ঘ পথ পেরিয়ে একসময় পাওয়া যায় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য দিতে পারার জ্যোতির্ময় মুহূর্ত। ফেব্রুয়ারিতে শীত তখনো পুরোপুরি বিদায় নেয়নি। কাজেই দীর্ঘপথ খালিপায়ে হেঁটে পুষ্পার্ঘ্য দিতে দিতেই বাংলাভাষার অবস্থা মোটামুটি করুণ হয়ে ওঠে। পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে বাংলা একাডেমীর বইমেলায় ঘণ্টা-দুই হাঁটাহাঁটির পর বাংলাভাষার গলা আরও শুকিয়ে যায়। এরপর একটা-দুটোর দিকে অবসন্ন শরীরে ক্লান্ত নিঃশেষিত অবস্থায় ঘরে ফিরে বাংলাভাষা সেই-যে বিছানায় শোয়, পরের বছর একুশে ফেব্রুয়ারির রাত তিনটার সময় আবার তা জেগে ওঠে।

উৎসব বর্ণাঢ্য ও স্বল্পস্থায়ী। কর্মসূচী নিয়মবাঁধাকঠিন ও দীর্ঘমেয়াদি। শারীরিক ও মানসিক শক্তির পুঁজি কম বলে উৎসব উদযাপনেই আমাদের সব শক্তি শেষ করে দিইতিলতিল কষ্টের ভেতর দিয়ে কর্মসূচীকে সম্পূর্ণ করতে পারি না। উৎসবের ঢাকের গগনবিদারী আওয়াজ আর আনন্দ-নৃত্যের আড়ালে আমরা কর্মসূচির গুরুতর কর্তব্যকে কেবলই ফাঁকি দিয়ে চলি।  

বাংলাভাষার প্রতি সাংবাৎসরিক কর্তব্যে অবহেলা করি বলে সেই ক্ষতিকে পুষিয়ে দেবার জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি বর্ণাঢ্য ও আলোকোজ্জ্বল সব অনুষ্ঠানমালা আয়োজন করতে হয়। কিন্তু তাতেও শেষ পর্যন্ত খুব একটা লাভ হয় না। সব সাড়ম্বর উৎসবের মতোই উৎসবের বাতি নিভে যাবার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গভাষা-প্রীতির আয়ুও শেষ হয়ে যায়।


১৮ ফেব, ২০১৬

এশিয়া কাপে প্রবাসীমেলা

ঢাকাতে আবারও শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ। মূল পর্বের আগে ১৯শে ফেব্রুয়ারি থেকে চলবে প্রথম পর্ব। আফগানিস্তান সাথে বাছাই পর্বে অংশ নিবে হংকং, ওমান ও আরব আমিরাত। এই তিন দলে আছে ৪৮ জন খেলোয়াড়, যার মধ্যে ২৪ জন পাকিস্তানী ও ৯ জন ভারতীয়। প্রায় ৭০ শতাংশ প্রবাসী খেলোয়াড় দিয়ে গঠিত এই দলগুলো এশিয়া কাপে স্থান করে নিয়েছে। বাদ পড়ে গেছে নেপাল এর মত নিজস্ব খেলোয়াড় দিয়ে গঠিত দল। ক্রিকেট সম্প্রসারণের ছলে পাকিস্তানী ও ভারতীয় খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার ক্ষেত্র তৈরি করছে এই এশিয়ান দলগুলো।

অভিবাসী খেলোয়াড় দিয়ে খেলা চালিয়ে এসব দেশ একসময় নিজ নিজ দেশের তরুণ প্রজন্মকে ক্রিকেট খেলতে উৎসাহী করে তুলতে পারবে সে আশা করিনা। আরব আমিরাত ভাড়াটে অভিবাসী খেলোয়াড় দিয়ে বিশ্বকাপ খেলেছিল ১৯৯৬ সালে। ২০ বছর পেরিয়ে এসেও এই দলে এখনও ১৫ জনের মধ্যে ৯ জন অভিবাসী।